Welcome to Law Firm

Wednesday, October 26, 2016

জেন নিন: CS, RS, SA, PS, BS জরিপ কি?

 আইন আদালত


“সিএস” হলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একে ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ বলা হয় যা ১৮৮৮ (ভূমি মন্ত্রণালয় অুনসারে ১৮৮৭) সাল হতে ১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত হয়। এই জরিপ ১৮৮৫ সালের বঙ্গীয় প্রজাতন্ত্র আইনের ১০ম পরিচ্ছেদে অনুসারে সিলেট ও পার্বত্য জেলা ব্যতীত সারা দেশে পরিচালিত হয়। উক্ত জরিপের মাধ্যমে জমির বিস্তারিত মৌজা নকশা (ম্যাপ) প্রস্তুত করা হয় এবং প্রত্যেক মালিকের জন্য দাগ নম্বর উল্লেখপুর্বক ভূমির বাস্তব অবস্থা, আয়তন, শ্রেণী, পরিমাণ, খাজনার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখপূর্বক খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপ পি-৭০ সীটে কিস্তোয়ারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
সিএস জরিপ ১৮৮৮ সালে কক্সবাজারের রামু থানা হতে আরম্ভ হয় এবং ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায় শেষ হয়। সে সময়ে সিলেট জেলা আসাম প্রদেশের অধীন থাকায় সিলেট জেলায় সিএস জরিপ হয়নি। তবে জরুরী বিবেচনায় ১৯৩৬ সালের সিলেট প্রজাস্বত্ব আইনের (Sylhet tenancy Act) আওতায় সিলেট জেলার ক্যাডাষ্ট্রাল সার্ভে ১৯৫০ সালে আরম্ভ করা হয় এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর অধীনে ঐ জরিপ ১৯৬৩ সালে শেষ হয়।
সি.এস. জরিপে সময় প্রস্তুতকৃত খতিয়ানে জমিদারগণের নাম খতিয়ানের উপরিভাগে এবং দখলকার রায়তের নাম খতিয়ানের নিচে লেখা হত। সে সময় জমিদারগণ সরকার পক্ষে জমির মালিক ছিলেন এবং রায়তগণ প্রজা হিসেবে শুধুমাত্র ভোগ দখলকার ছিলেন।
প্রথম জরিপ এই জরিপ এবং প্রস্তুতকৃত নকশা ও খতিয়ান খুবই নিখুঁত ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে এখনো গ্রহণীয়। মামলার বা ভূমির জটিলতা নিরসনের ক্ষেত্রে এই জরিপকে বেস হিসেবে অনেক সময় গণ্য করা হয়।
এস.এ. জরিপ (State Acquisition Survey)
১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২/৪/১৯৫৬ তারিখে এই আইনের ৩ ধারার আওতাধীন বিজ্ঞপ্তির মূলে সরকার কর্তৃক সকল জমিদারি দখল নেয়ার পর উক্ত এ্যাক্টের ১৭ ধারা মোতাবেক যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তা এস এ খতিয়ান বলে পরিচিত ।
মূলত, জমিদারী ও মধ্যস্বত্ব বিলোপ করে জমিদারগণকে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ তালিকা প্রণয়ন এবং ভূমি মালিকগণকে/রায়তকে সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আনয়ন করার লক্ষ্যে সে সময় একটি সংক্ষিপ্ত জরিপ ও রেকর্ড সংশোধনী কার্যক্রম পরিচালিত হয় যা পরবর্তীতে এসএ খতিয়ান বলে পরিচিত পায় । ১৯৫৬ হতে ১৯৬২ পর্যন্ত এই জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপে ভূমি মালিকের নাম ও জমির বিবরণাদি সম্বলিত হাতেলেখা রেকর্ড/খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় । সে সময় এই রেকর্ড মোট তিন কপি প্রস্তুত করা হয় যার মধ্যে একটি জেলা রেকর্ড রুমে, এক কপি তহশলি ( ইউনিয়ন ভূমি অফিস) অফিসে এবং অন্যটি সার্কেল পরিদর্শক (উপজেলা রাজস্ব) অফিসে প্রদান করা হয় । জরুরী তাগিদে জমিদারগন হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই জরিপ বা খাতিয়ান প্রণয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল।
পি.এস. জরিপ (Pakistan Survey)
এস.এ. জরিপকেই পি.এস. জরিপ বলে। ১৯৫৬ হতে ১৯৬২ পর্যন্ত এই জরিপ পরিচালিত হয়।
আর.এস. জরিপ ( Revisional Survey)
সি.এস. জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমির অবস্থা, প্রকৃতি, মালিক, দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার লক্ষ্যে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। এস.এ. জরিপের সময় সরেজমিনে তদন্ত বা জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা হয়নি। জমিদারদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এস.এ জরিপ বা খাতিয়ান প্রস্তুত করা হয়েছিল যার কারণে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যায়। এই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি জরিপ করার সিদ্ধান্ত নেয় যা আর.এস বা. Revisional Survey জরিপ হিসেবে পরিচিত। এই জরিপে প্রস্তুতকৃত নকশা (ম্যাপ) এবং খতিয়ান নির্ভূল হিসেবে গ্রহণীয়।
সিটি জরিপ (City Survey)
সিটি জরিপ এর আর এক নাম ঢাকা মহানগর জরিপ। আর.এস. জরিপ এর পর বাংলাদেশ সরকার কর্তিক অনুমতি ক্রমে এ জরিপ ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। এ যবত কালে সর্বশেষ ও আধুনিক জরিপ এটি। এ জরিপের পরচা কম্পিউটার প্রিন্ট এ পকাশিত হয়।
দিয়ারা জরিপ কি?
দিয়ারা জরিপ হলো দরিয়া সম্পর্কিত জরিপ। জেগে উঠা নতুন ভূখন্ড (চর) জেলা প্রশাসকের চাহিদার ভিত্তিতে সিকস্তি পয়স্তির কারণে ভৌগলিক সীমারেখা ও স্বত্বের পরিবর্তন হলে নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় নতুন জরিপ করা হয়। এ সমস্ত জরিপে নকশা ও রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়। এটি অতি পুরাতন জরিপ। ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ আরম্ভ হয় ১৮৮৮ সালে, পক্ষান্তরে দিয়ারা জরিপ আরম্ভ হয় ১৮৬২ সালে। দিয়ারা জরিপে সাধারন জরিপের জন্য প্রযোজ্য সকল স্তর অনুসরন করে পয়স্তি ভূমির(চর) নক্রা ও রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় দিয়ারা সেটেলমেন্ট অফিসারের নেতৃত্বে ৪টি (রাজশাহী, নরসিংদী, চট্রগ্রাম ও বরিশাল) বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক অফিস ও ক্যাম্পের মাধ্যমে সারাদেশের সুনির্দির্ষ্ট কিছু মৌজায় এ জরিপ কাজ পরিচালিত হয়।

Source: http://freedombd24.com/জেন-নিন-cs-rs-sa-ps-bs-জরিপ-কি/

Tuesday, October 25, 2016

ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক ট্রেনিং


৫০দিনের ২০০ঘন্টার ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক ট্রেনিং করানো হবে সরকারের উদ্যোগে সম্পূর্ণ ফ্রিতে। সারাদেশেই এ ট্রেনিং কাযক্রম একযোগে শুরু হচ্ছে নভেম্বর মাস থেকে। আজ থেকে রেজিঃ কাযক্রম শুরু করে দিতে পারেন সবাই।
মিনিমাম এইচ.এস.সি পাশ যেকোন স্টুডেন্ট এ ট্রেনিং নিতে পারবেন।
♦ কোর্স সমূহ:
- গ্রাফিক ডিজাইন
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- ওয়েব ডিজাইন
প্রতিটা কোর্সটি দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১ম ১০০ ঘন্টা বেসিক, পরের ১০০ঘন্টা অ্যাডভান্স ট্রেইনিং।
এর সাথে আবার প্রতি ১০০ঘন্টার সাথে যুক্ত থাকবে ২৫ঘন্টার সফট স্কীল কোর্স (আউটসোর্সিং করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের কোর্স)
একজন যে কোন একটি কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
♦ কিভাবে করবেন?
- নিচের লিংকে গিয়ে রেজিঃ ফরম পূরন করুনঃ
এইখানে ক্লিক করুন
অথবা এই লিংকে যান
http://ledp.ictd.gov.bd/
- ফরমটি পূরন করার পরের স্টেপে প্রশ্ন পাবেন, সেই প্রশ্নগুলোর
সঠিক উত্তর দিতে পারলে, আপনি রেজিঃ ১ম ধাপ পূর্ণ করলেন।
- এরপর আপনি যে জেলা থেকে পূরন করেছেন, সেই এলাকাতে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন, তারাই আপনাকে ১০দিনের মধ্যে ইন্টারভিউতে ডাকবেন। সেই ইন্টারভিউতে পাশ করলেই আপনি এ কোর্সটি করার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
http://ledp.ictd.gov.bd

ল ফার্ম
#collected

Saturday, October 15, 2016

এবার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পারিবারিক নি‌র্যাতনের মামলা করতে পারবেন স্বামী

এবার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পারিবারিক নি‌র্যাতনের মামলা করতে পারবেন স্বামী

বধূনি‌র্যাতন বিরোধী আইন ২০০৫-কে বৈষম্যমূলক ও সংবিধানবিরোধী বলে কাঁটছাঁটের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট


sc
নয়া দিল্লি, ৯ অক্টোবর। এবার থেকে মহিলা এমনকী অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিরুদ্ধেও পারিবারিক নি‌র্যাতনের মামলা দায়ের করতে পারবেন পুরুষরা। শনিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে একথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বধূনি‌র্যাতন বিরোধী আইন ২০০৫-এর ২(কিউ) নম্বর ধারায় পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই ধারা থেকে ‘প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ’‍ শব্দজোড়া বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। এর ফলে আইনটি এবার থেকে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োগ করা ‌যাবে। এমনকী প্রয়োগ করা ‌যাবে নাবালিকাদের বিরুদ্ধেও।

পড়ুন - স্ত্রী অকারণে হাঁড়ি আলাদা করতে চাপ দিলে বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে পারেন স্বামী


শ্বশুরবাড়িতে বধূদের ওপর ‌যৌতুক-সহ বিভিন্ন কারণে নি‌র্যাতন বন্ধ করতে ২০০৫ সালে এই আইন পাশ করেছিল ইউপিএ সরকার। তার পর থেকেই শুধু মহিলারাই আইনের সুরক্ষা পাবেন কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। একাধিক ক্ষেত্রে আইনের অপপ্রয়োগেরও অভি‌যোগ ছিল। এদিন একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে পুরনো একটি মামলার জের টেনে বিচারপতিরা বলেন, ‘পুরুষ ও নারীর এবং প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে এখন ফারাক আনুবিক্ষণিক। ‌আইনে ‌যে কারণ দেখিয়ে নারী ও পুরুষকে ভাগ করা হয়েছিল তার পিছনে কোনও ‌যুক্তি দেখাতে পারেনি আইনসভা (লোকসভা ও রাজ্যসভা)।’‍

পড়ুন - ধর্ষণের অভি‌যোগকারীর বয়ান বেদবাক্য নয়, বলল সুপ্রিমকোর্ট


৫৬ পাতার রায়ে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, ওই দু’‍টি শব্দ আইনটিকে বিভেদমূলক করে তোলে। এই আইন সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের বিরোধী।
 সুত্র ঃ http://www.india.com/bengali/india/any-person-can-now-be-tried-under-domestic-violence-act-supreme-court/

Sunday, October 9, 2016

Masters Results

Masters Final Results:

মাষ্টার্সের ফাইনাল ফলাফল জানতে 

Thursday, October 6, 2016

ডট বাংলা ডোমেইন পেল বাংলাদেশ

ন্টারনেট জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডোমেইন (ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেম-আইডিএন) ডট বাংলা (.বাংলা) ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ পেয়েছে বাংলাদেশ। ইন্টারনেট অ্যাসাইনড নাম্বারস অথোরিটি (আইএএনএ) ওয়েবসাইটে ডট বাংলা ডোমেইনটি বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এত দিন ডট বাংলা ডোমেইনটি ‘নট অ্যাসাইনড’ ছিল।
ইন্টারনেটে একটি রাষ্ট্রের জাতীয় পরিচয়ের স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করে এই ডোমেইন। যেমন ডট ইউএস ডোমেইন নামের কোনো ওয়েবসাইটে ঢুকলে বোঝা যায় সেটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট। ডট বাংলা তেমনি ইউনিকোড দিয়ে স্বীকৃত বাংলাদেশি ডোমেইন।
এই ডোমেইনটির ব্যাখ্যায় উইকিপিডিয়া বলছে, ডট বাংলা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একটি দ্বিতীয় ইন্টারনেট কান্ট্রি কোড টপ-লেভেল ডোমেইন (সিসিটিএলডি)। এই ডোমেইন বাংলা ভাষায় ওয়েব ঠিকানার জন্য বোঝানো হয়।
২০১২ সালে ডোমেইনটি ব্যবহারের অনুমতি পেলেও পরের তিন বছরেও তা সক্রিয় করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে ডোমেইনটি ‘নট অ্যাসাইনড’ হয়ে পড়ে। পরে এই ডোমেইন উদ্ধারে উঠেপড়ে লাগে বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এটি পেতে ভারত ও সিয়েরা লিওন আবেদন করেছিল।
বাংলাদেশের জন্য আইসিএএনএনের স্বীকৃত দুটি ডোমেইনের একটি হলো ডট বাংলা ও আরেকটি হলো ডট বিডি (.বিডি)।
 LawFirm

Source: Prothom alo.

Sunday, October 2, 2016

ব্রিটিশ হাউজ অব কমন্সের ফরেইন অ্যাফেয়ার্স কমিটির অতি সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলো কতগুলো মিথ্যা অজুহাতে লিবিয়া আক্রমণ করে গাদ্দাফির পতন ঘটিয়ে, দেশটিকে ধ্বংস করেছে এবং জঙ্গিবাদকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু গাদ্দাফির পতন ঘটিয়ে লিবিয়া দেশটিকে ধ্বংস করার পেছনে পাশ্চাত্যের মূল মতলব কী ছিল?
ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি কমিটির প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে, মূল মতলব ছিল ফ্রান্সের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি! ২০১১ সালের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটনের উপদেষ্টা এবং গোয়েন্দা বিষয়াদির বিশ্লেষক সিডনি ব্লুমেনথল ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে তার বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটনকে জানান : লিবিয়ার তেল উৎপাদনের বেশির ভাগ ফ্রান্সের অধিকারে নেয়া, উত্তর আফ্রিকায় ফরাসি প্রভাব বৃদ্ধি করা, ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী সারকোজির আধিপত্য বৃদ্ধি, ফরাসি সামরিক বাহিনীর মতা ও আধিপত্য বাড়ছে বিশ্বের চোখে এমন একটি চেহারা তুলে ধরা এবং আফ্রিকার ফরাসি ভাষী দেশগুলোতে ফ্রান্সের প্রভাব কমানোর জন্য গাদ্দাফির পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করাÑ এসব ছিল লিবিয়া অভিযানের মূল মতলব।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার গারিকাই চেঙ্গু প্রণীত এবং ‘গ্লোবাল রিসার্চ’ পরিবেশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর চোখে সম্ভবত গাদ্দাফির সবচেয়ে ‘গুরুতর অপরাধ’ ছিল তিনি তার দেশের সম্পদকে বিদেশী পুঁজির উপরে প্রাধান্য দিচ্ছিলেন এবং প্রকৃতভাবেই আফ্রিকান যুক্তরাষ্ট্র (ইউনাইটেড স্টেট্স অব আফ্রিকা) গড়ে তুলতে চাচ্ছিলেন। তার পরিকল্পিত আফ্রিকান আইএমএফ (ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড) এবং আফ্রিকান সেন্ট্রাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য গাদ্দাফি লিবিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের যে ৩০ বিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে রেখেছিলেন, ২০১১ সালের আগস্টে প্রেসিডেন্ট ওবামা তা বাজেয়াপ্ত করেন।
১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি কমিটির এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মতা থেকে বিদায় নেয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ২০১১ সালে লিবিয়াতে সামরিক
হস্তপে করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা ছিল ভ্রমাত্মক। সেই ভুল সিদ্ধান্তই উত্তর আফ্রিকাতে ‘ইসলামি জঙ্গিবাদের’ উত্থানে সহায়তা করেছে।
রিপোর্টে লিবিয়াতে বেসামরিক নাগরিকদের রা করার নামের অভিযানে লিবিয়ার শাসককে (গাদ্দাফি) পরিবর্তনের কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা এবং লিবিয়ার শাসনকর্তা একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ঘটানোর পর সে দেশের ভবিষ্যৎ শাসন কিভাবে পরিচালিত হবে সে বিষয়ে দীর্ঘকাল ধরে যথোপযুক্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে ব্যর্থতার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন এবং তার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কঠোর সমালোচনা করা হয়।
২০১১ সালে গাদ্দাফিবিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত ঘন জনবসতিপূর্ণ শহর বেনগাজির ওপর গাদ্দাফির সেনারা অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছে এবং সেই হুমকি নিরসনের জন্য ফ্রান্স ও ব্রিটেনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক যৌথ সামরিক অভিযান ২০১১ সালের মার্চে দফায় দফায় গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিমান আক্রমণ শুরু করে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যান (কনজার্ভেটিভ দলীয় সংসদ সদস্য) ক্রিসপিন ব্লান্ট বলেন, ‘লিবিয়াতে যুক্তরাজ্যের অভিযান একটি ভ্রমপ্রণোদিত হস্তেেপর সিদ্ধান্ত যার বিরূপ পরিণাম এখন পর্যন্ত সবাইকে ভোগাচ্ছে।’ তিনি বলেন, কমিটির সংগৃহীত তথ্যপ্রমাণে দেখা যায় বেসামরিক নাগরিকের ওপর (গাদ্দাফির) আক্রমণের যে হুমকিকে অজুহাত করে পাশ্চাত্যের সামরিক হস্তেেপর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সে হুমকির তথ্য ছিল অতিরঞ্জিত।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সামরিক হস্তেেপর অভিযানের ফলে উত্তর আফ্রিকার তেলসমৃদ্ধ দেশ লিবিয়া সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে গেছে এবং তার কিছু অংশে ‘ইসলামিক স্টেট’ জঙ্গিদের একটি নতুন শক্তিশালী দুর্গ গড়ে উঠেছে, যদিও সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের আধিপত্যের এলাকা কমে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল রিসার্চ কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাশ্চাত্যের সামরিক অভিযানে লিবিয়াতে বেপরোয়া বোমাবর্ষণ এবং ধ্বংস তাণ্ডবে একপর্যায়ে গাদ্দাফি মতা থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু পাশ্চাত্যের সামরিক জোট সামরিক অভিযানের মাধ্যমে গাদ্দাফিকে অপসারণের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গাদ্দাফিকে যখন হত্যা করা হয় তখন তিনি সম্ভবত দেশত্যাগ করে চলে যাচ্ছিলেন।
২০১১ সালের ফেব্র“য়ারি এবং মার্চেই গাদ্দাফি সম্ভবত লিবিয়া ত্যাগ করে চলে যাওয়ার পথ খুঁজছিলেন।
২০১১ সালের ২১ ফেব্র“য়ারি ব্রিটিশ সংসদ সদস্য লর্ড হেগ সাংবাদিকদের বলেন, তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে যে মুয়াম্মার গাদ্দাফি লিবিয়া ত্যাগ করে ভেনিজুয়েলায় (দণি আমেরিকা) রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতিতে রয়েছেন।
লেখক : প্রবীণ সাংবাদিক, প্রবাসী

- See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/157711#sthash.0ByPNqvs.dpuf