Headline
Welcome to Law Firm

Wednesday, September 28, 2016

প্রথম বিতর্ক Hillary Vs Trump

নিজেই নিজেকে বিব্রত করলেন ট্রাম্প


হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিজ্ঞতা খুব মধুর ছিল না। এ কথা তিনি নিজেই একভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন। বিতর্কের পর ট্রাম্প দর্শকদের সঙ্গে করমর্দনে সময় ব্যয় করার বদলে সাংবাদিকদের জন্য সংরক্ষিত কক্ষ—যা ‘স্পিন রুম’ নামে পরিচিত—তাতে এসে ঢোকেন। বাছাইপর্বে দুই দলের প্রার্থীই স্পিন রুমে ঢুকেছেন নিজেকে নিজে বাহবা দেওয়ার জন্য। সে কারণেই এই কক্ষের নাম স্পিন রুম। কিন্তু প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের বিতর্কের পর স্পিন রুমে আসার কোনো অতীত নজির নেই।
ট্রাম্প স্পিন রুমে ঢুকতেই অতি আগ্রহী সাংবাদিকেরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিতর্ক বিষয়ে তাঁর মতামত জানতে। তিনি কি সন্তুষ্ট? বিতর্কের সঞ্চালক কি ভারসাম্যপূর্ণ ছিলেন? ট্রাম্প বললেন, বিতর্কে তিনিই জিতেছেন এবং এই অভিজ্ঞতায় তিনি সন্তুষ্ট। পরক্ষণেই অবশ্য অভিযোগ করলেন, তাঁকে যে মাইক্রোফোন দেওয়া হয়েছিল, সেটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। ‘আমি ভাবছি, আমাকে এমন ত্রুটিপূর্ণ মাইক্রোফোন কি উদ্দেশ্যমূলকভাবেই দেওয়া হয়েছে?’
যেভাবেই তিনি কথায় স্পিন বা ‘পাক’ দেন না কেন, সন্দেহ নেই, এই বিতর্কে ট্রাম্প নিজেই নিজেকে বিব্রত করেছেন। যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই তিনি বিতর্কে এসেছিলেন, হয়তো ভেবেছিলেন বাছাইপর্বে যেমন সহজে বাজিমাত করেছেন, এবারও তা করতে পারবেন। ট্রাম্পের সমর্থকেরা যুক্তি দিচ্ছেন, হিলারি সব সাজানো কথা মুখস্থ করে এসেছেন, অন্যদিকে ট্রাম্প প্রতিটি প্রশ্নের জবাবে যা বলেছেন, তা সবই একজন অপেশাদার সাধারণ নাগরিকের প্রতিক্রিয়া। প্রশ্ন হলো, যুক্তরাষ্ট্র কি একজন অভিজ্ঞ ও পেশাদার রাজনীতিককে দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায়, না চায় একজন সাধারণ নাগরিককে?
প্রথম থেকেই হিলারি এই নির্বাচনকে ট্রাম্পের যোগ্যতা নিয়ে একটি গণভোট হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন। হিলারির বরাবরের ভাষ্য, ট্রাম্প মোটেই যোগ্য নন, কারণ প্রেসিডেন্ট হতে হলে যে মেজাজ চাই, ট্রাম্পের তা নেই। এই বিতর্কেও তিনি ঠিক সেই রণকৌশলটি অনুসরণ করেন। ট্রাম্প তাঁর বিত্ত বা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে খেপে যান, এ কথা হিলারি জানতেন। ফলে বিতর্কের প্রথম মুহূর্ত থেকেই তিনি তক্কে তক্কে ছিলেন ওই বিষয়ে কথা বলে প্রতিদ্বন্দ্বীকে খেপিয়ে তুলতে। সাধারণ মানুষ যে আয়কর দেয়, তা দিয়েই দেশের স্কুলের খরচ ওঠে, সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্যদের খরচ জোগানো হয়। ট্রাম্প সেখানে হয়তো এক পয়সাও আয়কর দেন না।
শান্তভাবে বললেও হিলারির এই কথায় বিদ্রূপ ছিল। সে কথা উল্লেখ করে রিপাবলিকান নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ রব স্টুটজম্যান মন্তব্য করেছেন, হিলারি মানসিক কসরত করেই কাবু করেছেন ট্রাম্পকে।
ট্রাম্প সম্ভবত কোনো পরিকল্পনা নিয়েই বিতর্কে এসেছিলেন, কিন্তু শুরু থেকে আক্রমণের মুখে পড়ে তাঁর সব হিসাব পাল্টে যায়। হিলারির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করার বদলে তিনি নিজের বিভিন্ন বিতর্কিত অবস্থান ব্যাখ্যায় সময় কাটাতে বাধ্য হন। তিনি ওবামার জন্মস্থান নিয়ে অনর্থক প্রশ্ন তুলেছেন, ইরাক যুদ্ধের পক্ষে ছিলেন, নারীদের প্রতি তাচ্ছিল্যপূর্ণ মনোভাব পোষণ করেন—একের পর এক এসব অপ্রিয় প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পায়ের নিচে মাটি হারিয়ে বসেন ট্রাম্প।
তাৎক্ষণিক এক জরিপে প্রতি দশজনের আটজন বিতর্কে হিলারিকেই জয়ী বলেছেন। এই হিসাব যদি সত্যি হয়, তাহলে ট্রাম্প হয়তো পরবর্তী বিতর্কে না-ও অংশ নিতে পারেন। সে জন্যই তিনি সম্ভবত ত্রুটিপূর্ণ মাইক্রোফোনের অভিযোগ তুলেছেন। ট্রাম্পের প্রধান সমর্থকদের একজন নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ানি সে কথাই আরও স্পষ্ট করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিতর্কের সঞ্চালক এনবিসির লেস্টর হল্ট ট্রাম্পের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছেন। জুলিয়ানি পরামর্শ দিয়েছেন, পরবর্তী সঞ্চালক নিরপেক্ষ হবেন—এমন নিশ্চয়তা না পেলে ট্রাম্পের উচিত হবে পরের দুটি বিতর্কে অংশ না নেওয়া।

Source prothom alo..

0 comments:

Post a Comment