Welcome to Law Firm

Wednesday, September 2, 2020

কেনাকাটায় ভোগ-বিলাসে অসুস্থ প্রতিযোগিতা

কেনাকাটা/ভোগবিলাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতা-----------------------------নারী/পুরুষ নির্বিশেষে,


## জরিপ চালিয়ে দেখতে পারেন, যাদের হোমলোন/ কারলোন/এবং বিসনেস লোন আছে, তাদের বেশিভাগ মানুষের অতিরিক্ত কেনাকাটা রয়েছে,  তাদের মানসম্মান  সবকিছুই লোনের কেনাকাটার  মধ্যে সীমাবদ্ধ, কেননা লোন তো মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশোধ করতে হয়না,

" এধার সে ওধার করা" তাই গায়ে লাগে না, সব তো ব্যাংকের টাকা, টাকা দিতে না পারলে বড়জোর একটা মামলা হবে, জেলে আরো আরাম, ফ্রি খানা আর ফ্রি বিছানা কোন চিন্তা নেই।

     

# ছেলেদের জীবনটা কি শুধুমাত্র বাবার পরিবর্তে অথবা নিজেই কর্তা হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে সংসারের ঘানি টানা ? 

*** ইসলামর নারীর দায়িত্ব নিতে বলেছেন,অতিরিক্ত অপচয়ে ভোগবিলাসী জীবনযাপনে সঙ্গী হতে বলেননি। অথবা সেই জীবনের সঙ্গ দিতে গিয়ে  অন্যায়/ দুর্নীতিতে জড়িয়ে অপরাধ করতে বলেননি।


# পুরুষ মানুষ, তাদের জীবনেও রয়েছে আশা, তাদের ও অধিকার আছে নিজের মতো পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করে, জীবনে সফলতার শেকড়ে আরোহন করার, সৃষ্টির উদ্দেশ্য জানা, জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখা।

### যদি ভারসাম্য বজায় রাখতেন, তাহলে আপনার জীবনে সফলতা কেউ আটকে রাখতেে পারতো না, কখনো অভাবে পরতে হতো না।


*** কিন্তু কয়জনে পারে নিজেকে প্রকাশ করতে? যৌক্তিক দায়িত্ব পালন করে জীবন উপভোগ করতে, কিন্তু অধিকাংশ পুরুষের জীবন মানে,একটা পেশা বেছে নেওয়ার পর বিয়ে করা, এবার যা করছি সবতো বৌ বাচ্চার জন্য,

 আবার, জীবন মানে দুবেলা দুমুটো খাবারের সন্ধানে জীবন শেষ করে দেয়া, 

# তারা জানেন না কোনটি তাদের যৌক্তিক দায়িত্ব!!! তাদের পরিবারের খবর কি তারা রাখেন? তাদের অর্জিত অর্থ দিয়ে কি পরিমান অপচয় হচ্ছে?  কোনটা প্রয়োজন? কোনটা অপচয়?? 

-------------------------------------------------------------------------------


# ## যাদের পেশা কাপড় সহ নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিস বানানো, যাদের পেশা কাপড়ের সহ অন্যান্য জিনিস বিক্রি করা তারা তাদের ব্যবসার প্রচার এবং প্রসারের জন্য নিত্য নতুন পন্য সামগ্রী উৎপাদন করবেন আর মজুদ রাখবেন, যাতে ভোক্তাগন প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী হাতের নাগালে পায় অভাব পূরন করে চাহিদা মেটাতে পারেন। এটাই স্বাভাবিক। 

কিন্তু, 

# আমরা অনেকেই আছি যারা বাজারে যে জিনিস বা কাপড়টি নতুন আসছে বিনা প্রয়োজনে দেখাদেখিতে শো-অফ করার জন্য অনেক অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করি, যা অর্থনীতিতে বিরাট প্রভাব সৃষ্টি করছে, মাসিক যত টাকা আয় করেন বিশাল একটা অংশ অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় হচ্ছে,অর্জিত টাকা হতে মাস শেষে কিছু  টাকা জমানোর পরিবর্তে অপ্রোজনীয় কেনাকাটা করে ক্রেডিট কার্ডের নেশায় বিভোর হয়ে আছি।


## ফলে, কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে / চাকরিচ্যুত হলে দ্বারে দ্বারে সাহায্য চাইতে হয়, সহযোগিতা না পেলে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে অনেক সুসম্পর্ক নষ্ট হয়,বলি আমার মতো অভাগা আর কেউ নেই।


###  ফলশ্রুতিতে, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আর ঋণের জর্জরিত হওয়াসহ নানা রকম সমস্যার পড়তে হয়। কেননা যারা এসব কেনাকাটায় সারা বছর উৎসব পালন করে তাদের অধিকাংশই বেকার কিংবা কোন বাবা/ভাই/স্বামীর উপর নিভর্রশীল।


# যার কাছে নতুন বিয়ে করা বৌ'কে দুইবেলা খাবার আর শাড়ি কিনে দেওয়ার  সামর্থ নেই,  তাকে ঐ দুবেলা খাবার,একটি শাড়ি দিতে না পারার অপারগতায় পদে পদে অপদস্ত হতে হয়, অনেক সুন্দর পরিবার ভেঙে ছারখার হয়ে যায়,  কত কথা শুনতে হয়, এটা যেন বড় মাপের অপরাধ, কাপড় দিতে না পারলে বিয়ে করলে কেন? যখন দুবেলা খাবার আর পোশাক নিশ্চিত করা খুবই প্রযোজন। সেটা অনেকে দিতে পারেননা, আরেক শ্রেণী অতিরিক্ত অপচয়ে বিভোর।


### আমাদের দেশে প্রতিদিন অনেক অনেক ভরনপোষণের মামলা হচ্ছে। 


 আবার তার বিপরীতে 

# কেননা এক শাড়ি বারবার পরলে / খাবার টেবিলে মেহমানের সামনে ৭/৮ রকমের তরকারি সাজিয়ে দিতে না পারলে, পাশের বাসার ভাবী আর বাবার বাড়ির লোকজনের সামনে আর বান্ধবীর সামনে তার বৌ'য়ের মান সম্মান বলে কিচ্ছু থাকলো না, 


# ফেসবুকের যুগে এক শাড়ি বার বার পরাই যায় না,কেননা আগের ছবিতে সবাই দেখেছে, এখন আবার পরলে কি মনে করবে সবাই তা? 

না হলে সবাই যে বেকডেটেড মনে করবেন।

কিন্তু, 

# প্রতিদিন শাড়ি কেনার সামর্থ যাদের থাকে/ভালো অনেক শাড়ি পরে আছে অব্যবহৃত অথবা যারা অনেক বেশি উপহার ও পান তারা শাড়ি পরেন না। 

# তারা বলেন আমার না শাড়ি খুব গরম আর ঝামেলা  মনে হয়,  একেবারেই  পরতে ইচ্ছা করে না।

# তারা চাপাচিপা অথবা ডিলাঢালা বিদেশি নামের ছেঁড়াফাড়া ছোট্ট ছোট্ট  কাপড় ব্যবহার করে বলে ওয়াও জোস্, দারুন কমফোর্টেবল, মেরেজ এনোভার্সারী তে স্বামীকে দিয়ে ইউএস / সিংগাপুর থেকে আনিয়েছি।

### পর্দা আর ইজজত এর গোষ্ঠী কিলাই,

"শুধু বৌকে উপহার দিবে বলে নিয়ে আসেন অথবা ব্যবহারের অনুমতি দেন আজেবাজে রকমের সব পোশাক "।

### তাই তো চারদিকে এখন উৎসব চলছে ওয়াল আলমারি বানানোর, কেননা এতবেশি অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করি, ফলে কাপড় চোপড়  আর জিনিসপত্র আমাদের আছে যা রাখার জায়গা আসলেই পুরোোনো আলমারিতে নেই,  এই হলাম আমরা, যাদের অভাবের শেষ নেই।

বিঃদ্রঃ "পোশাক মানুষের পরিচয় হতে পারে না, বিনা প্রয়োজনে প্রতিযোগিতামুলক জীবন যাপন মানুষকে বড় করতে পারে না, বড় হতে হলে মানুষের জন্য কিছু ভালো কাজ করুন, মানুষের হৃদয়ে একবার জায়গা করে নিন, যা কখনো বেকডেটেড বলে পরিবর্তন করার প্রয়োজন হবে না, যার মডেল হবেন শুধু আপনি "।


Writer: 

Taslima Akter  Rain

Masters of Law (LL.M.)

Souther University Bangladesh  


0 comments:

Post a Comment